হযরত বলেন, ‘একজন বলে আমি এই-এইভাবে সাধনা করে এত সম্পত্তির মালিক হয়েছি। আল্লাহ্ বলেন, আমি তোমাদের যা দিয়েছি তা থেকে খরচ কর।’ আমি বলি, এ সম্পত্তি আমার। আর আল্লাহ্ বলেন সম্পত্তি আল্লাহর। সূরা আর রাহমানে আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
হযরত বলেন, হরদুই হযরত বলতেন, ‘দেখাদেখি কারতে হেঁ, পুছতে নেহি। উলামাসে পুছো।’ সাধারণ মানুষ একে অন্যকে দেখে আমল করে, আলেমদের জিজ্ঞেস করে না। আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
হযরত বলেন, হরদুঈ হযরতের বাংলাদেশে প্রথম সফরের কথা। বৃহস্পতিবার রাত্রে হযরতের সাথী আলেমরা বলছিলেন ফযরের সময় প্রথম রাকাতে সূরা আলিফ লাম সেজদা এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা দাহার দিয়ে নামায পড়াতে হবে। হাফেজ সাহেব খোঁজা শুরু হলো। আনেক হাফেজ সাহেব। কিন্তু হযরতের সামনে নামায পড়তে কেউ রাজি হয়না। এখন মক্কা শরীফ গেলে দেখা যায় এই দুই সূরা দিয়ে শুক্রবারের ফযর নামায পড়া হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ, এখন আমাদের উত্তরা ৩নং সেক্টর মসজিদে এই দুই সূরা দিয়ে শুক্রবারের ফযর পড়া হচ্ছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নত জিন্দা হচ্ছে।
হযরত বলেন, মকতবে একটি শিশু ছয় বছর বয়সেই কায়দা পড়া শুরু করে। ছয় বছরের বাবুকে কি আমরা তাবলীগে নিতে পারবো? তাঁদের তালীমের উত্তম বয়স হল এটা। হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহঃ বয়সে তুলনামূলকভাবে বড় হযরতজীর চেয়ে বড় ছিলেন। বড় হযরতজী বারবার হযরত থানভী রহঃ -এর কাছে যেতেন। হযরত থানভী রহঃ-এর বিখ্যাত বাণী, ‘মাওলানা ইলিয়াস আমাদের নৈরাশ্যকে আশায় পরিণত করে দিয়েছে। আমরা চিন্তা করতাম আমরা ঘরে ঘরে যাই না কেন। আল্লাহ্ তা’আলা মাওলানা ইলিয়াস রহঃ-এর মাধ্যমে ঘরে ঘরে দাওয়াত পৌঁছানোর সিলসিলা চালু করেছেন। এজন্য মিলেমিশে কাজ করা উচিত।’
উলামায়ে কেরামের মর্যাদা সম্পর্কে হযরত বলেন, হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, العلماء ورثة الانبياء – উলামারা সকল নবীর ওয়ারিশ। আমার ওয়ারিশ বলেন নাই। সকল নবীদের ওয়ারিশ বলেছেন। আলেমরা হচ্ছেন নবীদের ওয়ারিশ। তাদেরকে তুচ্ছ জ্ঞান করা যাবেনা। ইংরেজি শিক্ষিত অনেক লোক নামায রোযা সকল ইবাদাত করেন কিন্তু উলামাদের সাথে মেশেননা। তাদেরকে ঘৃনা করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ সাদেকীনদের সাথে থাক। সাদেকীন কারা? হক্কানী উলামায়ে কেরাম, যারা সুন্নাতের উপর আমল করেন, তারাই সাদেকীন।
হযরত বলেন, ডান হাতে খানা খেলেও পেট ভরবে, বাম হাতে খেলেও। কিন্তু সুন্নাত হচ্ছে ডান হাতে খানা খাওয়া। কোনো বৈজ্ঞ্যানিক ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। আমাদেরকে এটাই অনুসরণ করতে হবে। এক সাহাবী বাম হাতে খাচ্ছিলেন। হযরত উমর(রাঃ) তাকে ডান হাতে খাওয়ার জন্য সতর্ক করলেন। একদিন, দুদিন, তিন দিনের দিন চাবুক দিয়ে মারলেন। তারপর সেই সাহাবী তার হাত তুলে দেখালেন এবং বললেন ‘মুতার যুদ্ধে আমার ডান হাত শহীদ হয়ে গেছে।’ এটা দেখে উমর(রাঃ) কেঁদে কেঁদে তার কাছে মাফ চাইলেন। আর বায়তুল মাল থেকে ভাতা দিয়ে একজন খাদেম নিযুক্ত করে দিলেন, যে তাকে আ্মৃ্ত্যু ডান হাতে খানা খাওয়াবে। তারপরেও বাম হাতে খানা খাওয়ার অনুমতি দেননি।
– হযরতের বাণী সংকলন ‘আত্মশুদ্ধির পাথেয়’ হতে সংগৃহীত
হযরত বলেন, দ্বীন শব্দের আনেক মানে। এটার এক অর্থ ধর্ম।
(৩ঃ১৯) ان الدین عند اللہ السلام
আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘নিশ্চয় ইসলামই আমার কাছে একমাত্র দ্বীন’।
আবার আছে,
(৫ঃ৩) الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ
‘আজকের এই দিনে আমি তোমার দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম।’ এখানে দ্বীন মানে ধর্ম। আমরা পড়ি مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ । এখানে يَوْمِ الدِّينِ মানে ‘প্রতিফলের দিন’। যেদিন প্রতিফল দেয়া হবে। শব্দ একই। অর্থ ভিন্ন। দ্বীনের আলোচনা মানে আসলে ধর্মের আলোচনা। দ্বীনের আলোচনা মানে প্রতিফল দিবসের আলোচনা। আর পুরো কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা’আলা কেবল ঐ আলোচনাই করেছেন।
– হযরতের বাণী সংকলন ‘আত্মশুদ্ধির পাথেয়’ হতে সংগৃহীত
হযরত বলেন, হযরত থানভী (রাঃ) বলতেন, ‘তোমার যদি পিতামাতার জন্য ইসালে সওয়াব করতে মনে চায় বা দান করতে ইচ্ছে করে, তবে পাচঁ হাজার টাকা নিয়ে রাতের অন্ধকারে বের হয়ে গরিব দুঃখিদের মাঝে বিলিয়ে দাও। তারপর মনে মনে বল- আল্লাহ! এর সওয়াব আমার আব্বা আম্মার কবরে পৌঁছে দিন। এটা সাথে সাথে পৌঁছে যাবে। দু’আর জন্য হাত উঠানো বা জায়নামাজে বসা জরুরি নয়। আল্লাহ পাকের কাছে সরাসরি বলাই দু’আ**।’
– হযরতের বাণী সংকলন ‘আত্মশুদ্ধির পাথেয়’ হতে সংগৃহীত
** মৌলিকভাবে হাত উঠানো জরুরি না হলেও দু’আর সুন্নাত ও আদবসমূহের মধ্যে হাত উঠানোর কথাও এসেছে। দু’আর সুন্নাত ও আদবসমূহ বিস্তারিত জানতে নির্ভরযোগ্য উলামায়ে কেরামের পরামর্শ নিন।
A site based on Islamic lectures of Hazrat Professor Muhammad Hamidur Rahman (DB)